১৬ বছর ধরে ম্যাপ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতেন আবু মাহফুজুল আজম এবং ৫ বছর ধরে আছেন ইজাজ আহমেদ সেজান। গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর ফাওগান বাজারের সাথে কৃষি উপকরন কোম্পানি ম্যাপ এগ্রোর কারখানায় ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে ছিলেন আজম। ২০১৭ সালে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ শুরু করেন ইজাজ আহমেদ সেজান। প্রতারক আজমের সহায়তায় চুরির বিদ্যার হাতে খরি হয় সেজানের। নিজের চতুরতা আর কথার যাদুতে অল্পদিনেই কারখানার সিকিউরিটি সহ সুপারভাইজার দের নিজের হাতে নিয়ে আসেন সেজান। গোডাউনে চাবি নিজের কাছে থাকায় কোম্পানি বিভিন্ন মালামাল সরাতে থাকেন। ২০১৯ সালে আজম এবং সেজান কেমিক্যাল চুরি করতে গিয়ে ধরা পরেন। মুচলেকা দিয়ে বেচে যান আজম। আর ইজাজ আহমেদ সেজান তার খালা ফাতেমাকে নিয়ে কোম্পানির চেয়ারম্যান ড.এআর মালিকের পায়ে ধরে মাফ চেয়ে লিখিত দিয়ে চাকুরীতে পুনঃবহাল হন। কিন্তু থেমে থাকেনি লম্পট সেজানের চুরির কারবার। সুপারভাইজার সাকিব ও আজমের সহায়তায় কারখানায় বসেই কোম্পানির উপকরণ ব্যাবহার করে আলাদা প্যাকেট তৈরি করে বানানো শুরু করেন নকল পন্য। সেই সকল পণ্য গাজিপুরের সরকার এ্যাগ্রোসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি শুরু করেন। সামান্য ২০ হাজার টাকার কর্মচারী সেজান কিনেছেন বোর্ডবাজারে বাড়ি, ঢাকায় ফ্ল্যাট, গাড়ি সহ ব্যাংকে জমিয়েছে লাখ লাখ টাকা। গত ২৮ জানুয়ারী ২০২২ রাতে কেমিক্যাল এর ড্রাম চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে বেরিয়ে আসতে থাকে থলের বিড়াল। ভারতীয় নাগরিক মোশাররফ হোসেন সুরাইয়া বিবির ঘরে জন্ম নেয়া সেজান মার্ডার মামলার আসামী হয়ে আত্নগোপনে চলে আসে বাংলাদেশে। আশ্রয় নেন গাজীপুরের গাছা থানার ঝাজরের বাসিন্দা মাহবুব ফকিরের বাসায়। কথিত মামা মাহবুব ফকিরের নামেও রয়েছে গাছা থানায় একাধিক মামলা। এলাকার নিরীহ মানুষের জমি জবর দখলের নেপথ্যে রয়েছে এই মাহবুব ফকির। মামা মাহবুব ফকিরের মাধ্যমে চাকুরী যোগার করেন ম্যাপ এগ্রোর কারখানায়। অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহবুব ফকিরের সহযোগিতায় সেজান গোপনে তৈরী করেছেন এনআইডি কার্ড। গত ১১ এপ্রিল ২০২২ শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ম্যাপ এগো কর্তৃপক্ষ। এরপর এজাজ আহমেদ সেজান গত ১২ এপ্রিল কোম্পানীর হেড অফিস মহাখালী ডিওএইচএস এ এসে তার কৃতকর্মের কথা স্বীকার করে ৩শত টাকার স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়ে বলেন, “আমি দীর্গদিন যাবত কোম্পানীর টাকা আত্মসাৎ করে আসছি” তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন সময় আত্মসাৎকৃত টাকা খালা ফাতেমা আক্তার ও মামা মাহবুব ফকিরের একাউন্টে জমা রেখেছি। জবানবন্দিতে আরো বলেন, পুনরায় চাকরি ফেরত পেলে চুরিকৃত ৪কোটি টাকা কোম্পানীকে ফেরত দেবেন। তার বক্তব্যে আরো উঠে আসে তিনি এই টাকা একা আত্মসাৎ করেননি সাথে ছিলেন ফ্যাক্টরী মেনেজার আবু মাহফুজুল আজম। ইজাজ সামান্য একজন কর্মচারী হয়ে নিজের বিয়েতে খরচ করেছেন ২০ লাখ টাকা। শ্রীপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মামুন জানান সেজান ও আজম পলাতক রয়েছে তাদের শীঘ্রই গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। ইতিমধ্যে সাকিব ও ফয়সাল বিবাদী আজম ও সেজানের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে জবান বন্দী দিয়েছে।
এ জাতীয় আরও খবর..
Leave a Reply