কখনো মৃধা গ্রুপ কখনো মাস্টার গ্রুপ, কখনো মিরপুর ডিওএইচএস কখনো মহাখালী ডিওএইচএস অাবার কখনো ধানমন্ডি ৯/এ অফিস। এমন পরিচয় দিয়েই চলছে সোহাগের প্রতারণা। নওগাঁর জেলার মান্দা উপজেলার দোডাংগী গ্রামের অাজিজুল ইসলাম ও সেলিনা অাত্তারের দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া সাদেকুল ইসালাম মৃধা সোহাগ এখন ঢাকার নতুন প্রতারক। রিজেন্ট গ্রুপের সাহেদ থেকে এখন রাজধানীর নয়া টাউট সোহাগ। কখনো সাবেক মেজর,কখনো প্রধানমন্ত্রীর অাত্নীয়,কখনো নির্বাচন কমিশনারের ভাই অাবার কখনো পরিকল্পনা মন্ত্রীর ছোট ভাই। এমন নানা পরিচয় দিয়ে চলছে তার নতুন নতুন ব্যাবসায়িক প্রতারণার অাইডিয়া। এফবিসিসিঅাই এবং বিজিএমইএর সদস্য পরিচয়ে বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করলেও অনুসন্ধানে এর অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায়নী।এফবিআইয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মোঃ জসিমউদদীন জানান,এটা দেশসেরা একজন প্রতারক অামরাও তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছি শীঘ্রই অাইনের অাওতায় নিয়ে অসবো। ছাত্র জীবনে জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দলের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল সাদিকুল ইসলাম সোহাগের। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে বোল পাল্টে হয়ে গেছেন কথিত অাওয়ামীলীগের নেতা। নিজেকে কখনো পরিচয় দেন মৃধা গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান অাবার সুযোগ বুঝে পরিচয় দেন মাস্টার গ্রুপের চেয়ারম্যান। নিজের ব্যবহত ভিজিটিং কার্ডে লেখা ৪, মহাখালী ডিওএইচএস কমার্শিয়াল এলাকা। অথচ এই ঠিকানা বা নামে কোন প্লট বা অফিস নেই।নোয়াখালীর অাকবর অভিযোগ করে বলেন মটো মেকার নামে তার একটি এ্যাপস তৈরি করেন। সেখানে তিনি দুুই লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তার মতো শত শত সাধারণ মানুষ এই অনলাইন প্লাটফর্মে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এখন তাদের সেই পেজটিও অার পাওয়া যাচ্ছে না। মোহাম্মদপুরের সরকার অাইটি থেকে তৈরি করেন এই এ্যাপস। তাদের টাকাও পরিশোধ করেননী প্রোতারক সোহাগ।
সাদেকুল ইসলাম সোহাগের প্রতারণার অারো একটি নাম মাস্টার গ্রুপ। এই গ্রুপের অধিনে ৯ টি প্রতিষ্ঠান দেখানো হলেও বাস্তবে কোন প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নী। এমনকি ট্টেডলাইসেন্সও নেই। মিরপুরের ডিওএইচএসের রোড ৭ এভিনিউ ৬ বাসা ৫৩৬ এই নামে নতুন অফিস খুলে চলছে সোহাগের নতুন মিশন। এবার পুরোদমে পত্রিকায় বিঙাপন দিয়ে চলছে বহুমুখী প্রতারনা। মাস্টার কুরিয়ার এন্ড ট্রান্সপোট নামে এজেন্ট নিয়োগ করছে সারাদেশব্যাপী। ইতিমধ্যে এই প্রতারক ১৫০টি এজেন্ট নিয়োগে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ৫ কোটি টাকা। এনিয়ে গত ১১ জানুয়ারী চট্টগ্রামের ইসহাক মিয়া পল্লবী থানায় জিডি করেছেন। অফিস সহকারী মতিউর ও রিদয় প্রতিবেদককে জানান, তারা কখনো কুরিয়ার এন্ড ট্রান্সপোট এর গাড়ি দেখেন নাই। এবং অফিসের কাজ সম্পর্কে তাদের ধারনা নেই। এই কোম্পানিতে দুই মাস হলো জয়েন্ট করেছেন তারা। প্রতিমাসেই এই অফিসে লোক পরিবর্তন হয় বলেও জানান মতিউর। অফিসের সহকারী ম্যানেজার শাওন জানান তিনি চাকরি করছেন ৩ মাস হলো শুনেছি মালিকের টেক্সটাইল গার্মেন্টস ফুডের কারখানা অাছে কিন্তু বাস্তবে কেউ দেখে নাই। তিনি জানান মালিকের সব কাজের তদারক করে থাকেন তার ভাতিজা সানী ও পিএস জাহিদ। অনুসন্ধানে বেরিয়ে অাসে সোহাগ শুধুই একজন প্রতারক নন। চরিত্রহীন লম্পটও বটে। অফিসে লোক নিয়োগের নামে চলে দেহ ব্যাবসা নিজে যেমন সুন্দরী নারীদের দেহ ভোগ করেন তেমনী ব্যাবসায়ী পার্টনারদের মনোরঞ্জনের জন্য সাপ্লাই করেন নারী। রিসিভশনে কাজ করতেন মাহি অাহমেদ নামে লালবাগের এক মেয়ে। সোহাগের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে চাকুরি হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়। নিজের কোম্পানির বিঙাপন বানানো নামে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে মডেলদের লোভ দেখিয়ে থাকেন লম্পট সাদেকুল ইসলাম সোহাগ। বসুন্ধরা এলাকার স্বপ্নছোয়া এজেন্সির জুয়েলের মাধ্যমে বিঙাপন বানানোর নামে বেশ কিছু মডেলকে ভোগ করেন এই সোহাগ। মোহাম্মদপুরের সিনথিয়া জানান, বড় মডেল হবার স্বপ্ন দেখান এই সোহাগ মৃধা। লুটেনেন তার দেহ কিন্তু কোন অাসা তার পুরন হয়নী। সামাজিক সন্মানের কথা চিন্তা করে বিষয়টি গোপন রেখেছেন।
ছাত্রদল নেতা পরিচয়ে হাওয়া ভবনে নিয়মিত যাতায়াত ছিলো সোহাগের। এখনও নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বিএনপির ইন্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের সাথে। সরকার পরিবর্তন হলে ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয় ব্যবহার করেন তিনি। এছাড়াও তিনি নিজেকে কখনও অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, কখনও গোয়েন্দা সংস্থার ঘনিষ্ঠ, আবার কখনও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। ‘বাংলামেইল’ নামে একটি আন্ডারগ্রাউন্ড অনলাইন পত্রিকার ব্যাবস্হাপনা সম্পাদক পরিচয়ে নিজেকে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব জাহির করে অর্থের বিনিময়ে টক-শোতে অংশ নিয়ে থাকেন সোহাগ। নিজেকে বড় সাংবাদিক বলে পরিচয়ও দেন অনেকের কাছে। কৌশলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তোলেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেন। এরপর তার অফিস, ও বাসার দেওয়ালে সরকারের ক্ষমতাধর ব্যক্তি বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তোলা ছবি বাঁধাই করে টাঙিয়ে রাখেন। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে তোলা ছবিকে পুঁজি করেই মাস্টার গ্রুপের মালিক সোহাগ অপকর্ম করে থাকেন। পাজেরো জিপ সামনে পোশাক পড়া বডিগার্ড পাশে পিএস গাড়িতে ভিঅাইপি হুইসেল পড়নে দামি স্যুট দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একজন মহাপ্রতারক। অথচ ঠকবাজি মিথ্যাচার ভন্ড অার লম্পট সাদেকুল ইসলাম মৃধা এভাবেই ভিভিআইপি স্টাইলে চলাচল করে থাকেন।
Leave a Reply